অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

এ রায়ের পর সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না: মির্জা ফখরুল

0
.

ঢাকা অফিসঃ

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশি সংবাদে দেখেছি, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে যা লেখা হয়েছে এরপর কোনো সভ্য দেশের সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। আমরা সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালতে বলা হয়েছে এদেশে মানবাধিকার নেই, পার্লামেন্ট পার্সনাল হয়ে গেছে, গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগকে তারা নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করছে। মির্জা ফখরুল বলেন, এই রায়ে প্রমাণ করে নির্দলীয় সরকার ছাড়া এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অতি দ্রুত নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিন। বগুড়ার মা-মেয়েকে নির্যাতনের জন্য তিব্র নিন্দা এবং জড়িতদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানান মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বর্তমান এই সরকার অবৈধভাবে অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় আছে। আপীল বিভাগের যে পূর্ণাঙ্গ রায় বেরিয়েছে, যেকোনো সভ্য দেশ হলে, গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার পদত্যাগ করতো।

গতকাল পত্রপত্রিকায় রায়ের যে অংশ পেয়েছি, আমরা দেখেছি যে রাষ্ট্রের একটি বড় প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রের স্তম্ভ বিচার বিভাগ তার রায়ে বলা হচ্ছে- দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, এদেশে পার্লামেন্টে নন ফাংশনাল হয়ে গেছে, এদেশে আইনের শাসন নেই এবং বিচার বিভাগকে তারা (সরকার) নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। মোটকথায় সার্বিকভাবে দেশে এখন কোনো গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার নেই, ভোটের অধিকার পর্য়ন্ত নেই। এমনকি এই কথাও পর্যবেক্ষনে বলা হয়েছে যে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।” ‘‘ আজকে এই কথা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে, এই সরকার সর্বোতভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে।

আজকে আমরা এই সভা থেকে আহবান জানাচ্ছি অবিলম্বে পদত্যাগ করে একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা করা হোক। এটা আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আমরা একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী মানুষ। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে মানুষের আশা-আকাংখাগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে এখানে ক্ষমতায় কেউ টিকে থাকতে পারেনি, আজকে যে অবৈধ অনৈতিক সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। জনগনের যে রায় সেই রায়ে তারা পরাজিত হবে। সারাদেশে বন্যা কবলিত দূর্গতদের ত্রান প্রদানে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। সারাদেশে নারী নির্যাতন বৃদ্ধি বি্শেষ করে বগুড়ায় দুই নারীর ওপর নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মাহবুবুর রহমান শামীম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, সম্পাদকবৃন্দ শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বদরুজ্জামান খসরু, গৌতম চক্রবর্তী, অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যক্ষ সোহরাবউদ্দিন, মীর সরফত আলী সপু, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আশরাফ হোসেন উজ্জ্বল,শহিদুল ইসলাম বাবুল, কাদের গনি চৌধুরী, মীর নেওয়াজ আলী সেলিম ভুঁইয়া প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

দলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিঃ

১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগরে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন। আলোচনা সভায় সময়সূচি পরে জানানো হবে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ও ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সময়সূচিও পরে জানানো হবে।