অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সাত বছর পর সম্মেলন: কে হচ্ছেন হাটহাজারী আওয়ামীলীগের কান্ডারী?

0
.

জিয়া চৌধুরী, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম):

দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। আগামী ১ ডিসেম্বর হাটহাজারী পৌরসদরের সরকারী পাবর্তী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইসমাইলের মৃত্যুতে শূন্য রয়েছে সভাপতির পদ। সেক্ষেত্রে এবারের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে নতুন কাউকে দেখা যাবে। সভাপতি পদের জন্য বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ আলী ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি কাজী এনামুল হক, উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাবেক উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ দিদারুল আলম বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল বাহার, আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সরওয়ার মোরশেদ তালুকদার এর নাম শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান আবারও প্রার্থী হবেন।

এছাড়াও বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এস এম মোরশেদুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ চৌধুরী মানিক, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি মোঃ শাহ আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ আজম উদ্দীন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থী আওয়ীমীলীগ নেতারা জানান, জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাবের পাশাপাশি ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নতুন কমিটি গঠন, ত্যাগী ও যোগ্য নেতার খোঁজসহ নানাবিধ আলোচনা চলছে নেতা-কর্মীদের মাঝে। আলোচনা হচ্ছে ‘কারা’ গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাচ্ছেন। দলের জন্য ত্যাগী, রাজনৈতিক যোগ্যতা, অতীত কর্মকান্ড, নির্যাতিত, হামলা-মামলাসহ নানাভাবে যোগ্যতা বিবেচনা করেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন যোগ্য নেতারা। হাটহাজারীতে আওয়ামীলীগের একাধিক গ্রুপ ও উপগ্রুপ রয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুচ গণি চৌধুরী সমর্থিত নেতা কর্মীদের আলাদা আলাদা শক্ত অবস্থান রয়েছে। তবে সম্মেলনে এসবের কোন প্রভাব পড়বেনা বলে দাবী করছেন আওয়ামীলীগ নেতারা।

উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠক ডট নিউজকে বলেন, আমরা উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়েছি। বেশিরভাগ ইউনিয়নের সম্মেলন শেষ করেছি। আশা করছি শান্তির্পূণভাবে আমরা উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারব।

সম্মেলনের প্রস্তুতির ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান জানান, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন ও একমাত্র পৌরসভার সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের পূর্বে আরো ৪টি ইউনিয়নের সম্মেলন করা সম্ভব হবে। বাকি দুইটি ইউনিয়নের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

নোমান চৌধুরী জানান, সম্মেলনে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম পাঠক ডট নিউজকে বলেন, তিন বছর পর পর সম্মেলনের নিয়ম থাকলেও কেন্দ্রের নিদের্শনা না পাওয়ায় এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা ও ইউপি নির্বাচন সহ নানা কারণে যথাসময়ে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। এখন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্দেশনা মোতাবেক হাটহাজারী সহ সকল উপজেলার সম্মেলন করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এম এ সালাম বলেন, আমার কোন নির্দিষ্ট অনুসারী বা গ্রুপ নেই। যারা আওয়ামীলীগ করে তারা সবাই আওয়ামীলীগের অনুসারী। আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি, অন্যরাও আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে। অন্য কারও অনুসারী থাকলে থাকতে পারে, আমার নেই। কোন ধরণের বিশৃংখলার আশংকা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তিপূর্নভাবে সম্মেলন হবে। দলের স্বার্থে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা সবাই এক। কেউ বিশৃংখলা করতে চাইলেও সেটা করতে সক্ষম হবেনা। সম্মেলনের ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।