অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নগরবাসীর সহযোগিতায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করতে চাই- আবদুচ ছালাম

0
.

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেছেন ৬৫ লাখ নগরবাসী দোয়া এবং সহযোগিতা নিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করতে চাই। এজন্য তিনি নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

পঞ্চমবারের মত সিডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে সরকার সোমবার এক প্রজ্ঞাপণে দুই বছর মেয়ার বৃদ্ধি করায় রাতে পাঠক নিউজের সাথে আলাপকালে আবদুচ ছালাম এ প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে যোগ্যমনে করে বার বার এ পদে বহার রেখেছেন এবং এর মাধ্যমে চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করছেন। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচ্ছক্ষতার বহি:প্রকাশ।

.

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নাম উল্লেখ করে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, আমি নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। চট্টগ্রামের ৬৫ লাখ মানুষ দলমত নির্বিশেষে আমাকে অকাতরে সহায়তা করেছেন। তাদের সহায়তা পেয়েছি বলেই এতগুলো প্রকল্প এভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, এমন অনেক কাজ করেছি যা এক কথায় দুঃসাধ্য ছিল। যেমন চট্টগ্রাম কলেজ রোড সম্প্রসারণ, পাহাড়তলী বাজারের উপর দিয়ে যাওয়া ঢাকা ট্রাংক রোড সম্প্রসারণ, পাঠানটুলি রোড সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে মানুষ নিজের বসতঘর ছেড়ে দিয়েছে। দোকান ছেড়ে দিয়েছে, অফিস ছেড়ে দিয়েছে।

মানুষের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবার নয়। তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, গণপূর্ত বিভাগ, বন্দর, রেলওয়ে, টিএন্ডটি, পিডিবি, ওয়াসাসহ এমন কোন সংস্থা নেই যারা আমাকে সহায়তা করেনি।

.

বিভিন্ন সংস্থা যেভাবে সহায়তা করেছে তার তুলনা হয়না বলে উল্লেখ করে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, এদের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, চট্টগ্রামবাসী গত ছয় বছর ধরে তাদের সহায়তা যেভাবে অব্যাহত রেখেছেন তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখলে চট্টগ্রামকে আক্ষরিক অর্থেই বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে দেখা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল প্রথমবারের মতো সিডিএ চেয়ারম্যান পদে আসেন ছালাম। তিনিই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়া প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তি।

বর্তমান সরকারের আমলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে অবকাঠামোগত বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প চলছে সিডিএর তত্ত্বাবধানেই। আর এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আবদুচ ছালামের প্রতিই আস্থা রাখছে সরকার।

.

২০১৪ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার নির্মিত হয় সিডিএর তত্ত্বাবধানে।

বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারও নির্মিত হয়েছে সিডিএর তত্ত্বাবধানে। ফ্লাইওভারটি নির্মাণের সময় ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর গার্ডার ধসে ১৩ জনের মৃত্যু হলে সমালোচনার মুখে পড়েন সিডিএ চেয়ারম্যান।

নগরীর দেওয়ানহাট এলাকার ফ্লাইওভারটিও নির্মিত হয়েছে সিডিএর তত্ত্বাবধানে। বর্তমানে কদমতলী এলাকাতেও আরও একটি ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলছে। যা প্রায় শেষ পর্যায়ে।

 ছালামের তত্ত্বাবধানে নগরীর বেশ কিছু সড়ক চওড়া করার কাজ শেষ করা হয়েছে। এই সময় কোর্ট রোড, স্টেশন রোড, রিয়াজউদ্দিন বাজার, লালদীঘির পাড়, আন্দরকিল্লাহ, বক্সিরহাট, খাতুনগঞ্জ, চাকতাই, চকবাজার এলাকায় সড়কের উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত আট বছরে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ককে চার লেনে রূপান্তর করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে চট্টগ্রামে সিডিএর তত্ত্বাবধানে ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলমান।

বর্তমানে সিডিএর তত্ত্বাবধানে ১২টি প্রকল্পের কাজ চলছে। এর মধ্যে চলতি বছরই শেষ হবে তিনটি প্রকল্পের কাজ। ২০১৮ সালের মধ্যে ৭টি এবং ২০১৯ সালের মধ্যে দুটি বড় প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

আবদুচ ছালামকে পঞ্চমবারের মতো নিয়োগ দেয়া হবে-এটা আগেই চূড়ান্ত ছিল। এই পুনঃনিয়োগ ঠেকাতে চট্টগ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ সম্প্রতি উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। এরপর গত ৩ এপ্রিল তার পুনঃনিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-এই কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করে একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ।

শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে ২৪ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আফসারী খানম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সিডিএ’র চেয়ারম্যান হিসেবে ছালামের আরো ২ বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়।